নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ঢাকার নবাবগঞ্জে সুরুজ দেওয়ান নামে এক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার দিবাগত রাতে উপজেলা যন্ত্রাইল ইউনিয়ন ছোট গোবিন্দপুর এলাকায় তার নিজ বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত সুরুজ দেওয়ান স্থানীয় আক্কাস দেওয়ানের ছেলে। এছাড়া তিনি যন্ত্রাইন ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগের সহ সভাপতি ছিলেন, পরবর্তীতে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত কলাকোপারের এসএম আরিফুল ইসলাম বাদি হয়ে গত ২১/৯/২৪ তারিখে ২৩৩ জনের নামসহ অজ্ঞাত আরও ৩০০ থেকে ৪০০ জনকে আসামী করে নবাবগঞ্জ থানায় মামলা করেন। সেই মামলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা সুরুজ দেওয়ানকে শনিবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সুরুজের গ্রেপ্তারের খবরে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন এলাকাবাসী। জানা যায়, ছোট গোবিন্দপুর হিন্দু অধ্যুষিত এলাকায়। ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হওয়ায় রাজনৈতিক প্রভার বিস্তার করে জিম্মি করে ফেলেন এলাকাবাসীকে। জমি সংক্রান্ত ঝামেলা, মারামারীসহ সব জায়গায় ছিল তার উপস্থিতি।
এলাকাবাসী জানান, সুরুজ খুবই চতুর প্রকৃতির লোক। প্রথমে তিনি নেতাদের ম্যানেজ করে বাগিয়ে নেন ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগের সহ সভাপতির পদ। কিছুদিন পর ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পাওয়ায় এলাকায় পরিচিত পান বড় নেতা হিসেবে। আওয়ামী লীগের সহযোগি সংগঠনের নেতা হওয়ায় পেয়ে গিয়েছিলেন দলিল লেখক এর সনদও। এরপরই ভাগ্য ঘুরতে থাকে তার। স্থানীয় সনাতন ধর্মের মানুষজন বিশ্বাস করে কাগজপত্রের সকল সমস্যা নিয়ে তার শরনাপন্ন হতেন। এ সুযোগ কৌশলে হাতিয়ে নিতেন হাজার হাজার টাকা। এভাবেই সামান্য ইউনিয়ন পর্যায়ের পদ পেয়ে কয়েক বছরেই গড়ে তুলেছেন কয়েক কোটি টাকার সম্পদ। এছাড়াও এলাকার বেশির ‘খ’ তফসিলের অর্ন্তভুক্ত জমি জাল দলিল মাধ্যমে নামজারি করাই ছিল তার অন্যতম পেশা। বেশ কিছু খ তফসিলের জমি জাল দলিলের মাধ্যমে নিজেই আত্মসাত করেছেন তিনি।
এত অভিযোগ থাকার পরও এলাকায় এতদিন দাপটে ছিলেন সুরুজ দেওয়ান। ২৪এর গণঅভ্যুত্থানের পর আওয়ামী লীগ ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীরা পালিয়ে গেলও অদৃশ্য শক্তির জোরে এলাকায় বহাল তবিরতেই ছিলেন এ স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা। নামপ্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, সুরুজের ক্ষমতা অনেক। তা না হলে যেখানে সব আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা পালিয়ে গিয়েছিল সেখানে সে আগের মত এলাকা প্রভাব বিস্তার করে ছিলেন। সুরুজ ছিল ছোট গোবিন্দপুর, গোল্লাসহ আশেপাশে ভূমি মন্ত্রী। কোন বাড়ীর কাগজে ঝামেলা, কোন সম্পত্তি খাস সবই ছিল তার নখদর্পনে। এভাবে বিপুল সম্পত্তি ও টাকার মালিক হয়েছে সুরুজ দেওয়ান। তবে অবশেষে সে গ্রেপ্তার হওয়ার এলাকাবাসী খুশি। কিভাবে এত সম্পত্তির মালিক হলেন ব্যাপারটা দুদকের দেখা উচিত।
নবাবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মমিনুল ইসলাম বলেন, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা সুরুজকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ড চেয়ে আজ আদালতে পাঠানো হয়েছে।
মোঃ আসাদ মাহমুদ (আয়ান) কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত
বানিজ্যিক কার্যালয় : জয়পাড়া বাজার, ডাকবাংলো রোড জয়পাড়া, দোহার,ঢাকা।
মোবাইল : ০১৬২৬৮৩৬৬১৮