মানিকগঞ্জ প্রতিনিধিঃ মানিকগঞ্জে একটি বেসরকারি হাসপাতালে অপরিণত অন্তঃসত্ত্বা নারীর অস্ত্রোপচারের পর এক নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার বিকেল ৫টায় মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকার জয়রা রোডে অবস্থিত আল মদিনা জেনারেল হাসপাতালে জন্ম নেওয়া শিশুটির মৃত্যু হয়।
জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার গড়পাড়া ইউনিয়নের তেঘুরি গ্রামের মতিয়ারের স্ত্রী শারমিন আক্তার পেটে ব্যথা নিয়ে মানিকগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে আসেন। রোগীর অবস্থা জটিল থাকায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখানে পর্যাপ্ত সাপোর্টিং ব্যবস্থা (আইসিইউ) না থাকায় কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শারমিনকে ঢাকায় যাওয়ার পরামর্শ দেয়। এরপর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে থাকাকালীন সময়ে তারা এক দালালের খপ্পরে পরে আল মদিনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের প্ররোচনায় পর্যাপ্ত সাপোর্টিং ব্যবস্থা ছাড়াই ৩৪ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা শারমিনের সিজারিয়ান অপারেশন করা হয়। এর একদিন পর নবজাতক শিশুটি মারা যায়।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০২২ সালের পর থেকে বৈধ কাগজপত্র বা নবায়ন ছাড়াই চলে আসছে আল মদিনা জেনারেল হাসপাতাল। হাসপাতালটিতে পর্যাপ্ত ডিউটি চিকিৎসক ও নার্স নেই। এর আগেও একাধিক রোগী মৃত্যুর অভিযোগ আছে এই হাসপাতালের বিরুদ্ধে।
শারমিনের স্বামী মতিয়ার বলেন, আমরা ঢাকায় চিকিৎসা করাতে যাচ্ছিলাম। আমার স্ত্রী ৩৪ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা। দালালের খপ্পরে পড়ে রবি নামের একজনের প্ররোচনায় এখানে আসি। আমার সন্তানটি মারা গেছে। আমাকে বোঝানো হয়েছিল, এখনই সিজার না করা হলে আমার স্ত্রী মারা যাবে।
এ বিষয়ে আল মদিনা জেনারেল হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরশেদ আলী বলেন, রবি নামের একজনের মাধ্যমে রোগীটি এখানে ভর্তি হয়েছে। কোন রোগীর অপারেশন করা যাবে আর কোনটা যাবে না, সেটা ডাক্তারের বিষয়। এর জন্য আমরা দায়ী নই।
অপারেশনকারী ডাক্তার হাজেরা বলেন, ইমার্জেন্সির কারণেই রোগীকে সিজার করা হয়েছে। তবে, যে রোগীকে সদর হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউ না থাকার কারণে ফেরত পাঠানো হয়েছিল, তাকে পর্যাপ্ত সাপোর্টিং ব্যবস্থা ছাড়া অপারেশন করা কতটা যুক্তিসঙ্গত ছিল, এই প্রশ্নের কোনো সদুত্তর তিনি দিতে পারেননি।
মানিকগঞ্জের সিভিল সার্জন ডাক্তার মোহাম্মদ খুরশিদ আলম বলেন, এ বিষয়ে এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।